গুপ্তধনের খোঁজে – ছোট গল্প

Share Now!


গ্রামের নাম মেহেরপুর। সবুজ শ্যামলে ঘেরা এক ছোট্ট গ্রাম। এই গ্রামে বাস করত দুই বন্ধু — রবি আর শামীম। ওরা ছিল ১ বছরের ছোট বড়, কিন্তু খুব কাছের বন্ধু। দু’জনেই গ্রামকে ভালোবাসত, আর গ্রামের জীবন তাদের অনেক আনন্দ দিত।

রবি:
“শামীম, আজকে বিকেলে নদীর ধারে যাবি? নৌকা চালাবো।”

শামীম:
“হ্যাঁ রে, যাব, আজকের বিকেলটা জম্পেশ হবে!”

রবি আর শামীম প্রায়ই নদীর ধারে এসে বসত। এখানে তারা নৌকা চালাতো, মাছ ধরার কথা ভাবত। আজকেও নদীর ধারে বসে দুই বন্ধু নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করছিল।

শামীম:
“রবি, শুনেছিস? গ্রামের পাশের জঙ্গলে নাকি এক গুপ্তধনের গল্প শোনা যায়!”

রবি:
“হ্যাঁ! আমি শুনেছি, তবে কেউ সঠিক জায়গাটা জানে না। যদি আমরা সেটা খুঁজে বের করতে পারি! তাহলে অনেক ভাল হবে”

 

গল্পটা শুনে রবি আর শামীম ঠিক করল, তারা গুপ্তধন খুঁজতে যাবে। মনের মধ্যে উত্তেজনা কাজ করতে শুরু করল। পরের দিন সকালে তারা জঙ্গলে যাওয়ার পরিকল্পনা করলো।

রবি:
“কাল সকালে ঠিক ভোরে উঠব। একটা মানচিত্র দরকার।”

শামীম:
“চল, কাকুকে জিজ্ঞেস করি। উনি হয়তো জানেন কিছু।”


পরের দিন, খুব ভোরে তারা জঙ্গলে প্রবেশ করল। সারা চারপাশে ছিল গভীর নীরবতা। বড় বড় গাছ আর লতাপাতার মধ্যে দিয়ে তারা এগিয়ে চলল। তাদের হৃদয়ে ছিল কৌতূহল আর একটু ভয়।

রবি:
“শামীম, সাবধানে চল। এখানে রাস্তা চেনা মুশকিল হবে।”

শামীম:
“ঠিক আছে, তবে মন শক্ত রাখ। আমরা পারব।”


অনেকক্ষণ হননও হয়ে খোঁজাতে লাগলো, এরপর তারা একটা পুরনো জমিদার বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেল। তারা বুঝতে পারল, এখানে কিছু আছে। বাড়ীতে ঢুকে গোপন কুঠুরির দরজা খুলতে গিয়ে রবি একটা পুরনো বাক্স পেল। বাক্সটা খুলতেই তারা দেখতে পেল কয়েকটা পুরনো মুদ্রা আর একটা হাতল ধরা নকশা করা তলোয়ার।

রবি:
“দেখ, শামীম! আমরা সত্যিই কিছু পেয়েছি!”

শামীম:
“অবিশ্বাস্য! কিন্তু এটা কারো গুপ্তধন নাকি অন্য কিছু?”

 

তারপর তারা সেখান থেকে চলে আসল, এরপর তারা গ্রামের এক বয়স্ক ব্যক্তির কাছে ওই মুদ্রা ও তলোয়ার নিয়ে গেল। তিনি তাদের বললেন, এটা কোনো গুপ্তধন নয়, বরং গ্রামের পুরনো ইতিহাসের নিদর্শন। এই জিনিসগুলো গ্রামেরই পূর্বপুরুষেরা রক্ষা করে রেখেছিল।

বয়স্ক ব্যক্তি:
“এগুলো আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি। এগুলোকে সম্মান করতে হবে। তোমরা এটাকে জ্ঞানার্জনের জন্য ব্যবহার করো, গুপ্তধন ভেবে নয়।”

রবি আর শামীম বুঝল, জীবনের আসল গুপ্তধন হল জ্ঞান আর বন্ধুত্ব। তারা ঠিক করল, গ্রামে স্কুল খুলবে যাতে গ্রামের বাচ্চারা ইতিহাস আর জ্ঞান নিয়ে বড় হতে পারে। এইভাবেই তারা বুঝেছিল, সঠিক জ্ঞানই আসল ধন।


এইভাবেই তাদের বন্ধুত্ব শুধু মজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না, সেটা গ্রামের সবার জন্য উপকারী হয়ে উঠল।

শিক্ষানীয় বিষয়:
বন্ধুত্ব ও জ্ঞান জীবনের আসল ধন, আর এটা সবাইকে ভাগাভাগি করতে হবে।

Related posts:

Leave a Reply