করোনার ভয়ে অন্য রোগ কে মোটেই অবহেলা করা যাবে না। দুশ্চিন্তার ভার নিতে পারিনা আমরা অনেকেই। তার উপর পরিস্থিতি যা হল, তাতে কত দিন যে দুশ্চিন্তার সঙ্গে ঘর করতে হবে, তার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। বিজ্ঞানীরা বলেই দিয়েছেন কোভিড ১৯ থে্কে সহজে মুক্তি নেই। হয়তো ভাইরাসের শক্তি কমে আসবে, কিন্তু নির্মূল হওয়ার সম্ভাবনা নেই আর এই দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের হাত ধরে অন্য রোগও এসে হাজির হতে পারে যে কোন সময়।
দু’জনের মধ্যে এখন দূরত্ব বেড়ে ৬ ফুট। তাতে মনের দূরত্বও যে বাড়বে না, এমন কথা বলাই বাহুল্য। নিয়মের বেড়াজালে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়৷ তার উপর বন্ধ রিল্যাক্সেশনের প্রায় সব মাধ্যম। দল বেঁধে জমিয়ে আড্ডা, একসঙ্গে বাইরে খেতে যাওয়া থেকে সিনেমা-থিয়েটার সবই এখন অতীত। মাঝে মাঝে পাহাড়ে-সমুদ্রে না গেলে যাঁদের মন বিষণ্ণ হয়, তাঁরা এ বার কী করবেন? সাজগোজ যাঁদের নেশা তাঁরা এ বার কোন অছিলায় জামাকাপড় বা মেকআপ কিট কিনবেন? তার উপর যখন-তখন, যেখানে-সেখানে তাড়া করবে রোগের ভয়। কেউ হাঁচি-কাশি বা নিজের গা একটু গরম হলেই দুশ্চিন্তার ছাপ লাগে কপালে ও মনে।
করোনার ভয়ে অন্য রোগ কে অবহেলা নয়, সুস্থ থাকতে মেনে চলুন এই নিয়ম গুলো
করোনার ভয়ে বাড়তে পারে কী কী?
ওবেসিটি: মানসিক চাপ বাড়লে অনেকেরই হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো মনোভাব হয়। তার প্রভাব পড়ে জীবন যাপনে। বাছবিচার না করেই যা খুশি করতে শুরু করেন। শরীর চর্চা ছেড়ে দেন, ব্যায়াম ও মনন চর্চা করেন না । ফলে ওজন বাড়ে। তার হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় হাই প্রেশার, হাই কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ, বাত জ্বর ইত্যাদির। ছোট খাট রোগ থাকলে তা বড় আকার ধারন করে।
আরও পড়ুন: যাদের জন্য মাস্ক ব্যবহার নিরাপদ নয় – দেখে নিন বিষয় গুলো #Mask
মানসিক চাপে ডায়াবিটিস বাড়ার ভয় বাড়ে।
ডায়াবিটিস: এই অসুখ এত দিন হয়তো ছিল আয়ত্তের মধ্যে। কারণ সঠিক খাবার খেতেন, ব্যায়াম ,হাঁটাহাটি করতেন। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করতেন করোনার ভয়ে সব বন্ধ হয়ে গেছে। মানতে পারছেন না খাবার খাওয়ার নিয়ম নীতি। সঙ্গে যোগ হল তীব্র মানসিক চাপ। ফলে রোগের প্রকোপ বাড়ার সব উপকরন মজুত।
অনিদ্রা: মানসিক চাপের সঙ্গে যোগ আছে অনিদ্রা। এর সঙ্গে যোগ রয়েছে আবার খিটখিটে মেজাজ ও মনোযোগ কমার। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতেও মুল হাতিয়ার সে। ফলে যে রোগের চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হচ্ছে, সে রোগ হওয়ার আশঙ্কাই বাড়ছে।
বদহজম: মানসিক চাপ বাড়লে অম্বল, বদহজম বাড়ে। নিয়ম মানা হয় না বলে আরও বাড়ে। টুকটাক অম্বল বা হজমের ওষুধ খেয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টায় তা বেড়ে যেতে পারে বলে বলেছেন অনেক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
ঋতুস্রাব: উদ্বেগের হাত ধরেই শুরু হতে পারে অনিয়মিত ঋতুস্রাব। মাসে একাধিক বার হওয়ার নেপথ্যেও কারিগরও এই টেনশন।
আরও পড়ুন: করোনা ভাইরাস কি? করোনার ইতিহাস – করোনা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, দুশ্চিন্তা করে যখন করোনাকে ঠেকাতে পারবেন না, তখন দুশ্চিন্তাকেই বরং ঠেকানোর চেষ্টা করুন। সঙ্গে ঠিক করুন জীবনযাপন। কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে সে কাজ অনেক সহজ হয়। যেমন—
• জীবনযাপনের নতুন নিয়মগুলি মেনে নিন। যত তাড়াতাড়ি মানবেন, ততই আপনার জন্য মঙ্গল।
• রিল্যাক্সেশনের নতুন পথ খুঁজুন। সে বই পড়া হোক বা অন্য পথে হক । ঘরে বসে সিনেমা দেখা বা হালকা ব্যায়াম করা। যোগাসন ও মেডিটেশনে মন হালকা হয়।
• টিভিতে বা মোবাইলে হালকা অনুষ্ঠান দেখুন। হাসির অনুষ্ঠান দেখলে আরও ভাল।
• ডায়াবিটিস, হাই প্রেশার ও ওবেসিটি থাকলে রোজ নিয়ম করে ব্যায়াম করুন। এখন হঠাৎ জিমে ভর্তি হয়ে যাওয়াও যাবে না। প্রশিক্ষক রেখে ব্যায়াম করার উপায়ও নেই। এখন যা করতে হবে একা। মনকে সে ভাবেই প্রস্তুত করে নিন। প্রয়োজনে ফোনে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারেন।
• খাওয়াতেও একটু লাগাম টানুন। ডায়াবিটিস ও মেদবাহুল্য থাকলে কার্বোহাইড্রেট ও মিষ্টি খাবারে লাগাম টানুন। হাই প্রেশার থাকলে নোনতা খাবার ও ভাজাপুরি বাদ দিতে হবে ।
• ঘন ঘন চা-কফি হাইজেনিক খাবার খেয়ে ঘুম নষ্ট করবেন না। মন ভাল রাখার অর্ধেক কিন্তু লুকিয়ে আছে এই ঘুমের মাঝেই।
• বাইরে করোনা আছে ভেবে কোনও অস্বস্তি শুরু হলে চিকিৎসা না করিয়ে বসে থাকবেন না। ফোনে বা অনলাইনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে । আপনি কি? এই তথ্যগুলো আগে থেকেই জানতেন? কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। লেখাটি ভাল লেগে থাকলে বন্দুদের মাঝে শেয়ার করুন ।আপনি কোন, বিষয়ে জানতে চান অথবা ভাল পরামর্শ দানে কমেন্ট করুন ।ধন্যবাদ!
আমাদের যোগাযোগের মাধ্যমঃ
Facebook Page YouTube Channel
সুত্র ঃ অনলাইন হেল্থ ও আনন্দবাজার