কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা, যা কম্পিউটার প্রোগ্রামকে নির্দিষ্ট বিষয়ে মানুষের সমতুল্য বুদ্ধিমত্তা দেয়ার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং হল Artificial Intelligence ( Ai ) Technology। যেখানে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজ এ বহির প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন হয়ে উঠেছে একটি অপরিহার্য বিষয় এবং সর্ব আধুনিক প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে অনেক কঠিন কাজকে সহজে তুলনা মুলক অনেক আল্প সময়ে সম্পাদন করা যায়। আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ডিপ লার্নিং নিয়ে পৃথিবীব্যাপী প্রচুর কাজ হচ্ছে। । আমরা যত আধুনিক জন্ত্রপারি দেখি, সবি এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
এই প্রযুক্তি ব্যবহারে যেমন উপকারী দিক রয়েছে তেমনি অপকারি দিক ও রয়েছে অনেক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যত বিস্তার ঘটবে । ডেটা সায়েন্স ও উদ্ভাবনী পণ্য বিশ্ব এগিয়ে যাবে । অফিস পরিচালনা থেকে শুরু করে মেশিন পরিচালনায় বাহবহিত হবে Artificial Intelligence ( Ai ) Technology । ফলে মানুষ অলস হয়ে পরবে এবং কর্ম হারাবে অনেক মানুষ ।
আরও পড়ুনঃ বৃষ্টিতে মোবাইল ভিজে গেলে কি করবেন বা করণীয় কি?
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমান সহকারী সফটওয়্যার যুক্ত করা হচ্ছে । এটাকে মানুষের একজন Vartual বন্ধু হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে । এই Artificial Intelligence (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) সঙ্গে যত বেশি সংম্পিক্ত থাকবে, মানুষ তত বেশি বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে । কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পুরো দুনিয়ার পাশাপাশি গুগলও উঠেপড়ে লেগেছে । গুগল এতটাই ডাটা সায়েন্স ও Ai নিয়ে কাজ করছে যে, আপনি হটাত অসুস্থ হয়ে পরেছেন, গুগল আপনাকে জানাবে যে , আপনার এই রোগের জন্য এই Medicine খান । আপনি বলবেন আমি এই Medicine খাই না গুগল বলবে আপনি গত মাসে Lazz Pharma থেকে এই রোগের জন্য এই Medicine কিনেছেন prescription এর তথ্য তাই বলছে । আপনি যদি বলে যে আমি কিনি নি গুগল বলবে আপনার credit card থেকে আপনি payment করেছেন। গুগল আপনার সকল ইনফরমেশন ডাটা সায়েন্স এবং Ai এলগোরিদম এর মাধম্নে সংরক্ষণ করে থাকে । এই ভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান Ai তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে থাকে ।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?
Oxford Internet ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লুসিয়ানো ফ্লোরিদি বলেছেন যে, কোনটা সম্ভব এবং কোনটা বিশ্বাসযোগ্য সেটার পার্থক্য আগে বুঝতে হবে । এটা হয়তো সম্ভব কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য নয়। AI এর অস্তিত্বের প্রশ্নেও এরকম শঙ্কা বিরাজ করে। এটা একটি বিতর্ক, তাই এটা নিয়ে আমাদের সময় নষ্ট করা উচিত নয় ।এছাড়াও ইন্টারনেট উদ্যোক্তা মার্থা লেন ফক্স উভয় সম্মত হন যে, AI এর প্রশ্নে অনেক বেশি চাপ ও উদ্বেগ আছে। যে প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে ইতিমধ্যেই মানুষের আস্থা কম এবং AI এর জটিলতা একে আরো ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।
কনসালটেন্সি কগনিটিভ এর কো ফাউন্ডার তাবিথা গোল্ডস্টাব জানান, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে অনেক চমকপ্রদ ঘটনাও ঘটেছে । কিন্তু Ai কে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা বেশ মুশকিল । সবার এ বিষয়ে একটি আলাদা ব্যাখ্যা আছে এবং ১৯৬০ এর পর থেকে এটি নিয়মিত বদলাচ্ছে। তিনি আরও জানান, মানব বুদ্ধির উন্নয়নের তুলনায় কম্পিউটার বেশ শক্তিশালী ভূমিকা রাখে । একটা শিশু যেমন আস্তে আস্তে করে বিভিন্ন মানুষের মুখ আলাদা করে চিনতে শেখে, ঠিক তেমনি Ai । তবে এক্ষেত্রে Ai এখনো যুক্তি বুঝতে পারদর্শী হয়নি ।
৩০ বছর আগে যেখানে একটি মেশিনের কথা ভাবতাম যা একটি ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে পারত। এখন আমরা গুগলের এর তাত্ক্ষণিক অনুবাদক গুগল ট্রান্স লেটের মত Application এ পাচ্ছি ।
আরও পড়ুনঃ আজব প্রস্তাব বন্ধুর সাথে সেক্স করলেই মিলবে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেভাবে আমাদের ধ্বংস করতে পারে – স্টিফেন হকিং – Artificial Intelligence
Stephen Hawking থেকে শুরু করে Elon Musk সহ বিশ্বের শীর্ষ কয়েকজন বিজ্ঞানী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলেন, এটি একসময় হয়তো মানব প্রজাতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু আসলে এসব যন্ত্রের জন্য নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এতোটাই দক্ষ হয়ে উঠছে যে, হয়তো দুর্ঘটনাবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের ভুল কোন কাজে লাগানোর মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্ব বিলীন করে দিতে পারে।
‘Human Compatible: ( Ai and The Problem Control )‘ নামের বইটি লিখেছেন University of California’s Professor Stuat Rasel, যিনি আধুনিক যন্ত্র সক্ষমতা প্রযুক্তির ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ । তিনি বলেছেন, ” Hollywood সিনেমায় দেখানো হয় যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যন্ত্রগুলো নিজে নিজেই সচেতন হয়ে উঠছে এবং মানুষকে ঘৃণা করতে শুরু করছে আর সবাইকে মেরে ফেলতে চাইছে। কিন্তু রোবটের কোন মানবিক অনুভূতি থাকে না । সুতরাং এটা একেবারেই অহেতুক একটা বিষয়, যা নিয়ে নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
অন্য এক সাক্ষাৎকারে তিনি হুমকির একটি কল্পিত উদাহরণ তুলে ধরেন, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন । কল্পনা করুন যে, আমাদের একটি অতাধনিক শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা আছে, যে টি বিশ্বের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং সেটি ব্যবহার করে আমাদের প্রাক-শিল্প পর্যায়ের কার্বন ডাই-অক্সাইড মাত্রার নিয়ন্তন করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে চাই। ”তখন এই সিস্টেম ঠিক করলো যে, এটা করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে পৃথিবী থেকে সব মানুষকে সরিয়ে ফেলা, কারণ পৃথিবীতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের দিক থেকে মানুষই সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ।
আপনি হয়তো বলবেন, তুমি যা চাও সব কিছুই করতে পারবে, শুধুমাত্র মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না। তখন ওই যন্ত্র কী করবে জানেন কি? এটি তখন আমাদের সন্তান কম নেয়ার ব্যাপারে প্রভাবিত করবে, যতক্ষণ না পৃথিবী থেকে মানুষ শেষ হয়ে যায়। মানুষ খুব চিন্তাভাবনা করে নির্দেশ না দিলে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে বলে মনে করেন Stuat Rase।
আরও পড়ুনঃ প্রেমিকার স্থান দখলে নিচ্ছে সেক্স রোবট – বিপর্যয়ে মানব সভ্যতা – যৌন কর্মীর ভূমিকায় রোবট।
যুক্তরাজ্যের Cambridge University Center for the Study of Extensional Resk র তথ্য অনুসারে বর্তমানে Ai পদ্ধতিগুলো অ্যাপ্লিকেশন সীমাবদ্ধ আছে, যেগুলোর নকশা করা হয়েছে সুনির্দিষ্ট কোন problem সমাধান এর জন্য ।
১৯৯৭ সালে,Computer Drip Blue দাবায় তৎকালীন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন গ্যারি কাসপারভ এর সাথে ছয়টি খেলা হয় এর মধ্য একটি ম্যাচে হারিয়ে দেয় । তা
পরেও ডিপ ব্লুকে মানুষ বিশেষভাবে নকশা করেছিল শুধু দাবা খেলার জন্য।
কিন্তু পরবর্তীতে আবিষ্কৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আলফাগো জিরো সফটওয়্যার তিনদিন ধরে নিজের বিরুদ্ধেই (একটি বোর্ড গেম) খেলার পরে দক্ষতার দিক দিয়ে ‘Super Human’ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে । ”কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই সিস্টেম যতই শক্তিশালী হয়ে উঠবে, ততই এটি অতি বুদ্ধির অধিকারী হয়ে উঠবে। এটি হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের সক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন, এক্সিসটেনশিয়াল রিস্ক সেন্টার ।আর এ কারণেই অধ্যাপক রাসেল বলছেন, মানুষের উচিত রোবট বা যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে ।
যে কারণে আমরা Artificial Intelligence তৈরি করেছি, তার মূল ভিত্তিই আমাদের বদলে ফেলা উচিত,” তার মতে, রোবটকে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ঠিক করে দেয়া এবং সেটি থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শিক্ষা নেয়ার মতো ধারণা থেকে সরে আসা উচিত। ”বরং সিস্টেম টা এমন হওয়া উচিত যেন সেটি জানতে না পারে যে, আসলে সে কী উদ্দেশ্যে কাজ করছে।” ”যখন আপনি এভাবে সিস্টেমটি পরিচালনা করবেন, তখন সেটি আসলে মানুষের থেকে পিছিয়ে থাকবে তারা, কোন কিছু করার আগে প্রশ্ন করতে শুরু করবে, কারণ যন্ত্র তখন আর নিশ্চিত হতে পারবে না যে, আপনি কী চাইছেন।” অধ্যাপক রাসেল বলছেন, বিশেষ করে তখন System গুলো নিজেদের গুটিয়ে রাখবে, কারণ সেগুলো এমন কিছু করতে চাইবে না, যা আপনি অপছন্দ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ বন্ধ হয়ে যেতে পারে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট পরিষেবা! দুশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা।
একটা সুন্দর উদাহরণ তুলে ধরেন, অধ্যাপক রাসেল ; ২০০১: এ স্পেস ওডিসি’ চলচ্চিত্রে একটি বিদ্রোহী কম্পিউটারকে তুলে ধরা হয়েছে । ”আমরা যে পদ্ধতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করেছি সেটি অনেকটা যেন বাতির ভেতরে থাকা দৈত্যের মতো। আপনি বাতি ঘষবেন, তখন দৈত্য বেরিয়ে আসবে আর আপনি বলবেন যে, আমি চাই এটা করা হোক।” বলছেন অধ্যাপক রাসেল । ”আর তখন যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথেষ্ট সক্ষমতা থাকে, আপনি যা করতে বলবেন, সেটা ঠিক তাই করবে। আপনি যা চাইছিলেন, তাই পাবেন।
এখন বাতির দৈত্যের সমস্যা হল, সেখানে তৃতীয় ইচ্ছার ব্যাপারটি থেকে যাচ্ছে। যদি বলেন প্রথম দুটো ইচ্ছা বাতিল করে আগের মতো করে দাও, কারণ আমরা আমাদের লক্ষ্য ভালোভাবে ঠিক করতে পারছি না। সুতরাং যদি একটি যন্ত্র এমন একটি উদ্দেশ্যে কাজ করতে শুরু করে, যা ঠিক নয়, তখন সেটি মানব সভ্যতার জন্য শত্রু হয়ে উঠতে পারে। যে শত্রু আমাদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী হবে।সব কথার মুল কথা হল , এই সিস্টেম কে নিজের দাশত করে রাখতে হবে ।