ডেঙ্গু জ্বর – রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা

Share Now!
ডেঙ্গু জ্বর
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

ডেঙ্গু জ্বর – বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মহামারি রূপ ধারন করেছে। আর্টিকেল লেখা পর্যন্ত হাজারের উপর মানুষ মারা গেছে। এই ডেঙ্গুর ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে।

বাংলাদেশ সহ প্রায় ১১০টির অধিক দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয়ে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৫ থেকে ৫০ কোটি মানুষ এই ডেঙ্গু ভাইরাসে  সংক্রমিত হয় হয়ে থাকে। তার মাঝে ১০ থেকে ২০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়।

১৭৭৯ সালে প্রথম  ডেঙ্গু ভাইরাস পাওয়া যায়। ২০ শতাব্দীর প্রথমভাগে ডেঙ্গু ভাইরাসের উৎস ও সংক্রমণ বিশদভাবে জানা যায়। সরাসরি ডেঙ্গু ভাইরাসকে লক্ষ্য করে ওষুধ ও টিকা উদ্ভাবনের গবেষণা চলমান রয়েছে।

Video

 

ডেঙ্গু জ্বর – রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা

ডেঙ্গু কি?

ডেঙ্গু হল একপ্রকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভাইরাস জনিত রোগ। যা একপ্রকার মশা থেকে থেকে ছরিয়ে থাকে।

ডেঙ্গু মশা কি?

ডেঙ্গু মশা হল এক প্রকার বিশেষ প্রজাতির মশা যার নাম এডিস মশা। এই মশা জন্মে আমাদের বাসার আশে পাশে জমে থাকা পানিতে।

ডেঙ্গু জ্বর কি?

ডেঙ্গু জ্বর হল একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাসটি সংক্রমণ হয়ে থাকে। যা কিনা তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। 

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ

প্রথমিক অবস্থায় ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ৮০% উপসর্গবিহীন অথবা সাধারণ জ্বরের মতই সামান্য উপসর্গ দেখা দেয়।  ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ সুমাহ নিম্নে আলোচনা করা হলঃ

  • জ্বর
  • শরীরে ব্যথা
  • মাথাব্যথা
  • চোখে বিশেষত চোখের পেছনের দিকে ব্যথা
  • মাংসপেশি
  • অত্যধিক জ্বর, ৪০ °সে (১০৪ °ফা)-র বেশি
  • হাড় এবং অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ইত্যাদি

হলো আপনি ধরে নিবেন আপনার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে।  তবে ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষন হল জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে ছোপ ছোপ দাগ অথবা লাল ফুসকুঁড়ি হিসাবে দেখা দেয় — এই তিনটি প্রধান ডেঙ্গুর উপসর্গ । এই লক্ষণ সাধারণত ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বেশির ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠে।

ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার

ডেঙ্গুর প্রতিকারে যা যা করা প্রয়োজন-

  • জ্বর কমানোর জন্য শুধু মাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন। 
  • জ্বরের মাত্রার উপর নির্ভর করে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর পর ঔষধ সেবন করতে হবে।  
  • ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে জ্বর কমাতে গিয়ে অ্যাসপিরিন অথবা ব্যথানাশক কোন প্রকার ঔষধ সেবন করা যাবেনা।
  • জ্বর কমাতে হালকা গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছতে পারেন।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া নিতে হবে।
  • পর্যাপ্ত তরল খাবার গ্রহন করতে হবে।
  • ভারি কোন কাজ করা যাবেনা।

 

কিভাবে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করবেন

মূলত ডেঙ্গু মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। এছারা ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধী টিকা মাত্র কয়েকটি দেশে অনুমোদিত হয়েছে। তবে এই টিকা শুধু  তারাই দিতে পাবেন যারা একবার সংক্রমিত হয়েছেন।  তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য এডিস মশার তথা ডেঙ্গু মশার বংশবিস্তার করে এমন উপযোগী বিভিন্ন জায়গা, যেমন, কাপ, টব, টায়ার, ডাবের খোলস, গর্ত, ছাদ ইত্যাদিতে জমে থাকা পানি অপসারণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায় । এছারা শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢেকে রাখে এমন পোশাক প্ররিধানের মাধবেও প্রতিরোধ করা যায়।

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা

ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান চিকিৎসা হল পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম নেওয়া এবং বেশি করে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করা যেমন ডাবের পানি। জ্বর কমাতে সাধারণ প্যারাসিটামল খাওয়া। প্রয়োজনে রোগীর শিরায় স্যালাইন দেওয়া। রক্ত স্বল্পতা ও মারাত্মক রূপ দেখা দিলে রোগীকে ডাক্তারের পরামশ অনুযায়ী রক্ত ও স্যালাইন দেওয়া।

শিশুদের ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
বাচ্চাদের ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে যেমনঃ
পেটের ব্যথা,
অনবরত বমি,
শরীরে পানি জমা,
নাক, মাড়ি থেকে রক্তপাত,
অতিরিক্ত দুর্বলতা,
অস্থিরতা,
লিভার স্ফীতি
অণুচক্রিকা দ্রুত কমতে থাকে

প্রশ্ন উত্তরঃ 
১। ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ?

উত্তরঃ  ডেঙ্গু জ্বর কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় অর্থাৎ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে স্পর্শ করলে কিংবা একই বিছানায় ঘুমালে কোন আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এই রোগ শুধুমাত্র স্ত্রী মশার মাধ্যমেই ছড়ায়।

২। ডেঙ্গু রোগীর খাবার কি?

উত্তরঃ তরল জাতীয় খাবার যেমন  ডাবের পানি, দুধ, ছানা, ডালরা এছাড়া আয়রনযুক্ত শাকসবজি, আপেল, কলা, কমলা, বেদানা, খেজুর, কিশমিশ ইত্যাদিত খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয় এছাড়াও ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবারও খাওয়া উচিৎ।

৩। এডিস মশা কখন কামড়ায

উত্তরঃ একটা সময় বলা হতো ডেঙ্গু মশা শুধুমাত্র দিনের বেলা কামড়ায়। কিন্তু ডেঙ্গু মশা সম্প্রতি তাদের চরিত্র বদলেছে। এখন দিনে রাতে সব বেলাতেই কামড়ায়। বিশেষ করে যদি রাতে ঘর আলোকিত থাকে।

৪। ডেঙ্গু জ্বর কতদিন থাকে?

উত্তরঃ অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে – ১। ক্লাসিকাল ২।হেমোরেজিক।

ক্লাসিকাল ডেঙ্গু সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। 

৫। ডেঙ্গু রোগের ওষুধ?

উত্তরঃ ডেঙ্গু জ্বরের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রোগের উপসর্গ এর উপর নির্ভর করে চিকিৎসা। পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খাবার ও বিশ্রাম নিতে হবে সাথে জ্বর কমাতে সাধারণ প্যারাসিটামাল খাওয়াতে হবে। এছাড়াও উপসর্গ দেখে ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি ও ইন্ট্রাভেনাস থেরাপি বা ব্লাড ট্রান্সফিউশন পর্যন্ত হতে পারে।

সারাংশ

বর্তমান বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর এক মহামারি রূপ ধারন করেছেন। এই এডিস মশা তথা ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে থেকে সুরক্ষায় থাকতে হলে। নিজেকে সচেতন হতে হবে এছাড়াও যে জায়গায় ডেঙ্গু মশা বংশবিস্তার করে সেগুলো ধ্বংস করতে হবে। 

পোস্ট কিওয়াডঃ ডেঙ্গু জ্বর, ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ, ডেঙ্গুর প্রতিকার, ডেঙ্গুর উপসর্গ, ডেঙ্গুর চিকিৎসা, এডিস মশা, ডেঙ্গু মশা, Dengue Mosa, ডেঙ্গু জ্বরের কারণ, ডেঙ্গু রোগের ওষুধ, ডেঙ্গু রোগীর খাবার, ডেঙ্গু টেস্ট,  ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ,ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয়,শিশুদের ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার,

আপন একাডেমী  টেক নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

আরও পড়ুনঃ

>> ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায়

>> How to Active 24 Hours On Fiverr Account | Fiverr Bangla Tutorial 2023 | Part 05

>> ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয়ের সুযোগ দিচ্ছে দারাজ বাংলাদেশ

>> ইউটিউবের ভিডিও কপি পেস্ট করে লাখ টাকা উপার্জন – Copy Paste Work on YouTube

>> Best Affiliate Site in Bangladesh – Earn Money from Sohoj Affiliates

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.