ইসমে আজম – মনের আশা পূরণ হওয়ার দোয়া

Share Now!
ইসমে আজম
মনের আশা পূরণ হওয়ার দোয়া

ইসমে আজম – মানুষ মাতৃক, অনেক সময় বিপদ আপদের সন্মুখিন হয়ে থাকেন, তখন সে একা একা তা সমাধানের চেষ্টা করে থাকেন।কিন্তু অনেক সময় তা আর সমাধান করতে পারেন না।সেই সময় মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। সেই সময়টিতে, নিজের কার্যসিদ্ধির উদ্দেশ্যে মনের প্রত্যাশা পূরণে মহান আল্লাহর স্মরণাপন্ন হওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না।

মনের একান্ত আশা-প্রত্যাশা পূরণে কোনো মানুষেরই প্রবল আগ্রহের ও চেষ্টার কমতি থাকে না। সে কারণেই নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার পরিপূর্ণতায় নানাবিধ চেষ্টা সাধনা করে থাকেন মানুষ। কোনো ভাবেই যখন কোনো কিছু হয় না। তখন তারা ফিরে আসেন ধর্মের দিকে অথবা ইসলামিক স্কলারদের স্মরণাপন্ন হয়ে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ  যে কোন কারনেই – আপনি কি হতাশ ? – নিরাশ হচ্ছেন বার বার? 

এই কঠিন মুহুরতে, মনের আশা পূরণ সম্পর্কে একটি আমলের কথা তুলে ধরেছেন হাদিসে পাকে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইসমে আজম’র কার্যকরী দিকনির্দেশনার কথা উল্লেখ করেছেন।তো চলুন আমরা দেখে নেই।

ইসমে আজম’ হলো আল্লাহ তাআলার মহান নাম। এ ‘ইসমে আজম’ এর আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কাকুতি মিনতি করে, হালাল যে কোন কিছু চাওয়া হলে মহান আল্লাহ তাআলা তা পূরণ করে থাকেন। এই মহান নামের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করলে বা ডাকলে তিনি, তার  বান্দার সে ডাকে সাড়া দিয়ে থাকেন।

ইসমে আজম – মনের আশা পূরণ হওয়ার দোয়া

এ মর্মে  নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অনেক গুলো  হাদিসের বর্ণনা পাওয়া যায়।

ইসলামিক স্কলারদের মতে ‘ইসমে আজম’

অনেক ইসলামিক স্কলার ‘ইসমে আজম’ সম্পর্কে বলেছেন, এটি হলো মূল নাম ‘আল্লাহ’। আল্লাহ তাআলার অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে। এর মধ্যে মূল নাম হচ্ছে- ‘আল্লাহ’। এ নামটিকে অনেক ইসলামিক স্কলার ‘ইসমে আজম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

কোনো বান্দা-বান্দি  যখন অন্তরের গভীর থেকে কায়োমনো বাক্যে এ ‘ইসমে আজম’ অর্থাৎ – ‘আল্লাহ, আল্লাহ’, নামের জিকির করে। আল্লাহর কাছে মনের একান্ত আশা পূরণে কোনো কিছু চান, তবে আল্লাহ তাআলা তা অবশ্যই কবুল করে নেন।

আরও পড়ুনঃ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ৬ টি সহজ পদ্ধতিতে অর্থ উপার্জন!

সে কারণে মানুষের মনের  চাওয়া-পাওয়া ও আশা পূরণে একান্ত কোনো কিছু চাওয়ার আগে, আল্লাহ তাআলাকে ‘ইসমে আজম’ এর মাধ্যমে ডেকে ভালোবাসা, আস্থা, ভরসা থেকে কায়োমনোবাক্যে  ও দ্বীনতা এবং হীনতার সঙ্গে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ জিকির করে প্রার্থনা করা হয়; তবে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার চাওয়াকে ফিরিয়ে না দিয়ে তা পরিপূর্ণ  করে দেন।

হাদিসের বর্ণনায় ‘ইসমে আজম’

তিরমিজির হাদিস ৩৪৭৫

‘ইসমে আজম’ সম্পর্কে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ ( স: ) থেকে নির্দিষ্ট করে হাদিসের কিছু বিশেষ বাক্যের দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়। তাহলো-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ আল-আসলামি (রাদিয়াল্লাহু আনহু ) তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে তার দোয়া এভাবে বলতে শুনেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনিই একমাত্র আল্লাহ, আপনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, আপনিই একক সত্তা, স্বয়ংসম্পূর্ণ, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি, আর তার সমকক্ষ কেউ নেই।’

আরও পড়ুনঃ  নিউজ ও ভিডিও শেয়ার করে প্রতিদিন ৫~১০ ডলার উপার্জন করুন | Make Money on Video Share 2022 | Apon Academy

বর্ণনাকারী বলেন, প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওই ব্যক্তির মুখের এ বাক্যগুলো শুনে তখন বললেন-

সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন! নিঃসন্দেহে এ লোক আল্লাহ তাআলার মহান নামের (ইসমে আজম) অসিলায় তার কাছে প্রার্থনা করেছে; যে নামের অসিলায় দোয়া করা হলে আল্লাহ্‌ তাআলা কবুল করেন এবং যে নামের অসিলায় প্রার্থনা করা হলে তিনি দান করেন।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ) হাদিস

এ হাদিসের আলোকে অনেক হাদিস বিশারদ-গণ বলেছেন, এটিই হলো সেই দোয়া।  যেটিকে ‘ইসমে আজম’ বলা হয়ে থাকে।

হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফতহুল বারীতে আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি ( রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ) এ হাদিসটিকে ‘ইসমে আজম’ এর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ হাদিস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এ ‘ইসমে আজম’ পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দোয়া করলে অবশ্যই তিনি বান্দার মনের সব ভালো ও কল্যাণকর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের একান্ত কল্যাণকর চাওয়া পাওয়া পূরণে আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভক্তি এবং আস্থা-ভরসা রেখে সংক্ষেপে ‘ইসমে আজম’র আমল করা। আল্লাহকে ডেকে মনের চাওয়া-পাওয়াগুলো পূরণ করার আবেদন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের জীবনের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ‘ইসমে আজম’ এর আমল যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। আমিন

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.