ই-সিম (eSIM) – হচ্ছে এক ধরনের উন্নত প্রযুক্তির এমবেডেড সিম। eSIM এর পূর্ণরুপ ” Embedded Subscriber Identity Module, যাহা প্রচলিত Physical SIM Card এর তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক ও শক্তিশালী। ই-সিম ব্যাবহারের জন্য স্মার্টফোনের ভিতর একটা Microchip বসানো থাকে। যার সাথে এই Virtual সিম কার্ডটি এমবেডেড করা হয়ে থাকে। eSim মুলত পরিবেশ বান্ধব সিম।
[lwptoc min=”2″ depth=”6″ hierarchical=”1″]
ই-সিমের যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ
ই-সিমের যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। ৭ মার্চ ২০২২ তারিখ থেকে ই-সিম দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। eSIM চালুর অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে গ্রামীণফোন। বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো ই-সিম চালু করছে গ্রামীণফোন। এই পরিবেশ-বান্ধব ডিজিটাল সিম ( eSIM 4G ) সমর্থন করে এমন ডিভাইসে প্লাস্টিক সিম কার্ড তথা Physical SIM Card ছাড়াই কানেক্টিভিটির সম্পূর্ণ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন গ্রামীণফোনের গ্রাহকগন।
SIM Card ও eSIM এর মধ্যে পার্থক্য কি?
সিম কার্ড ও ই-সিম এর মধ্যে পার্থক্য কি? নিচে আলোচনা করা হলঃ
SIM – Subscriber Identity Module, এহা একটি Physical প্লাস্টিক সিম কার্ড। এর জন্য সিম রাখার জায়গা লাগে। প্লাস্টিক সিম পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এই সিম অপারেট করা তুলনা মূলক ভাবে কঠিন। এই সিম নিদিষ্ট অপারেটর এর বাহিরে কাজ করে না।
eSIM – Embedded Subscriber Identity Module, এহা একটি ভার্চুয়াল সিম। এর জন্য কোন জায়গা লাগে না মাইক্রো চিপে ইন্টিগ্রেট করা যায়। এহা পরিবেশের বান্ধব সিম। এই সিম অপারেট করা তুলনা মূলক ভাবে সহজ। এই সিমে একাধিক নেটওয়ার্ক এবং নম্বর সংযুক্ত করা যাবে।
আরও পড়ুনঃ
Make Money Online 2022 – Earn Up To 7$ Per Signup – Part Time Jobs – Earn Money From Home
eSIM কথায় পাব?
গ্রামীণফোনের নতুন ই-সিম সংযোগ পেতে হলে ক্রেতাদের eSIM সমর্থন করে এমন Device নিয়ে গ্রামীণফোনের এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) সহ গ্রামীণফোন নির্ধারিত কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করে ই-সিমের জন্য অনুরোধ করতে হবে। এছাড়াও গ্রামীণফোনের অনলাইন শপের মাধ্যমেও ই-সিমের জন্য অনুরোধ করা যাবে।
” eSIM 4G “, সমর্থনকরা ডিভাইসের ক্যামেরা দিয়ে QR Code স্ক্যান করে eSIM 4G Active করতে হবে। এক্ষেত্রে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযোগ তথা মোবাইল ডাটা অথবা ওয়াইফাই চালু থাকতে হবে। ই-সিম চালু হলে্ল প্রচলিত সিম কার্ডে যে ঝামেলা রয়েছে তা দূর হয়ে হবে।
গবেষকগন জানিয়েছেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে ই-সিমের ব্যবহার বেড়ে হবে ৩.৪ বিলিয়ন। একাধিক নেটওয়ার্ক ও নম্বর একটি ই-সিমে সংযুক্ত করা যাবে। তবে এটি নির্ভর করবে স্মার্টফোনের ওপর। এই ভার্চুয়াল সিমের মাধ্যমে বিশ্বজুড়েই নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি সেবা নিশ্চিত করা যাবে।
বাংলাদেশে eSIM সমর্থন করে কোন ফোনেগুলো?
বর্তমান Bangladesh এ কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচে ই-সিম সমর্থন করে। এসব ডিভাইসসমূহ হলোঃ
- আইফোন ১২,১৩ সিরিজ, আইফোন ১০আর, ১০এস এবং আইপ্যাড প্রো।
- স্যামসাং এর গ্যালাক্সি এস২০, এস২১ সিরিজ।
- গুগলের গুগল পিক্সেল ৩,৪,৫ ৬ সিরিজের সব গুলো ফোন সাপোর্ট ক…
- মটোরোলা রেজার শুধুই eSIM সাপোর্ট করে।
- স্যামসাং গিয়ার ডিভাইসসমূহ সাপোর্ট করে।
- অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৩,৪,৫,৬ সুমহ সাপোর্ট করে।
সকল মোবাইল অপারেটর কি ই-সিম সাপোর্ট করে?
বর্তমানে গ্রামীণফোন অপারেটর ছাড়া অন্য অন্য অপারেটর ই-সিম সাপোর্ট করেনা। তবে অদুর ভবিষ্যতে সকল নেটওয়ার্ক সমর্থন করবে। যেহেতু এটা আধুনিক প্রযুক্তি, তাই কিছুদিনের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড হয়ে দাঁড়াবে।
আইফোনে কিভাবে ই-সিম সেটআপ কর?
- প্রথমে আপনাকে সেটিংস অপশনে এ যেতে হবে।
- এরপর Cellular or Mobile Data অপশনে টাপ করুন।
- এরপর Add Cellular Plan অপশনটিতে টাপ করুন।
- এবার অপারেটর থেকে পাওয়া QR কোডটি স্ক্যান করে নিন।
- মোবাইলে অবশ্যই ইন্টারনেট কনেক্টশন থাকতে হবে।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ই-সিম কিভাবে সেটাপ কর?
- প্রথমত আপনার ফোনের সেটিংস অপশনে জান।
- তারপর Network & internet অপশন পাবেন সেখানে টাপ করুন।
- এরপর Add অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করুন
- এবার স্ক্রিনে আসা ইন্সট্রাকশন গুলো ফলো করুন।
- এরপর Use 2 Number এই অপশনটি সিলেক্ট করে দিন ।
ব্যস eSim Setup Complete, এখন মনের আনন্দে Advance Technology ব্যবহার করুন। আর Apon Academy ইউটিউব চ্যানেলে সুবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন।
ই-সিম এর সুবিধাসমূহ
১। ই-সিম এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো খুব সহজে নেটওয়ার্ক অর্থাৎ মোবাইল অপারেটর পরিবর্তন সম্ভব।
২. এটা পরিবেশ বান্ধব সিম।
৩। একাধিক অপারেটর ও নাম্বার একসাথে ব্যবহার করা যায়।
৪। SIM রাখার জন্য অতিরিক্ত জায়গার প্রয়োজন নেই। এর ফলে ব্যাটারি সাইজ বাড়াতে বা নতুন ফিচার যুক্ত করা যাবে।
৫। যে এলাকায় নেটওয়ার্ক সিগনাল কম পায়, এমন এলাকায় গেলে সকল সিম থেকে যে সিমের নেটওয়ার্ক ভাল আছে, সে সিম ব্যবহার করা যাবে এই সিমের মাধ্যম
৬। ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নাম্বার ও ব্যবসায়িক কাজে জন্য আলাদা একটি নাম্বার ব্যবহার করতে চাইলে এই সিম দারা সম্ভব।
৭। চুরি হওয়া ফোন ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে। নেটওয়ার্ক ট্র্যাকিং করে।
ই-সিম এর অসুবিধাসমূহ
প্রত্যেক ক্রিয়ারি বিপরীত প্রতিকিয়া রয়েছে অর্থাৎ যার সুবিধা রয়েছে তার অসুবিধাও রয়েছে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক অসুবিধা গুলোঃ
১। প্রথমত এই সিমে কোন প্রব্লেম হলে একা একা সমাধান করা সম্ভব না।
২। ফোনের কোনো সমস্যা হলে এই সিম থেকে মোবাইল নাম্বার ও তথ্য উদ্ধার করা সহজ নয়।
৩। আপনার গতিবিধি এই সিম এর সাহায্যে পর্যবেক্ষণে করছে, এমন সন্দেহ হলে সিম খুলে ফেলার কোন সুযোগ নেই।
৪। এখনো পুরোপুরি ভাবে সব দেশে সব জায়গায় এই সার্ভিস পাওয়া দুস্কর। এখনো জনপ্রিয় হতে ও মূলধারার প্রযুক্তিতে প্রবেশ করতে আরো অনেক সময় লাগবে।
তবে বিচার -বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যেহেতু অসুবিধার চেয়ে সুবিধা ই বেশি । তাই, আশা করা যায় যে আগামীতে এই সিমের সকল সীমাবদ্ধতা ও সমস্যা গুলো কাটিয়ে একটি জনপ্রিয় স্মার্ট সিম হয়ে উঠবে।
আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আর কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ
আরও পড়ুনঃ
>> ব্যস্ত থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে চলে যাবে ইমেইল
>> How To Money Transfer Payoneer to Bkash – ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা এখন বিকাশে